খুলনা, বাংলাদেশ | ২১ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ৬ মার্চ, ২০২৫

Breaking News

  গুলশান থানার মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিকের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত, উৎপত্তিস্থল ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত
  অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের নতুন সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন অধ্যাপক সি আর আবরার

সেহরি খাওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত

 হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী

সেহরি খাওয়া সুন্নত। সেহরিতে রয়েছে বরকত ও কল্যাণ। ইয়াহুদি-খ্রিস্টানরাও রোজা পালন করতো কিন্তু তারা ভোররাতে সেহরি গ্রহণ করতো না। তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভোররাতে সেহরি খাওয়ার বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। সেহরি খাওয়ার ফজিলত ও গুরুত্ব হলো-

১. সেহরি পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয় বরং ন্যূনতম এক ঢোক পানি পান করলেও সেহরি আদায় হয়ে যাবে। হাদিসে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السَّحُورِ بركَة অর্থাৎ ‘তোমরা সেহরি খাও। কেননা, সেহরিতে বরকত রয়েছে। (মুসলিম)

যেহেতু সেহরি খাওয়া বরকতের কাজ। সুতরাং ক্ষুধা লাগুক আর না লাগুক; খেতে ইচ্ছা হোক আর না হোক; তবুও সামান্য পরিমান হলেও শেষ রাতে খাবার খেয়ে নেয়া বরকতের কাজ। এ ক্ষেত্রে উদর ভর্তি করে খাওয়া আবশ্যক নয়। যদি কেউ শুধু পানি পান করে, শরবত পান করে বা একটি খেজুর খায় তবে কেউ এ বরকত থেকে বঞ্চিত হবে না।

২. অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সেহরি খাওয়া বরকতময় কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিত্যাগ করো না। এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সেহরি কর। কারণ যারা সেহরি খায় আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (মুসনাদে আহমদ, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, ইবনে হিব্বান)

ইফতার যেমন তাড়াতাড়ি খাওয়া সওয়াবের কাজ; তেমনি সেহরি দেরিতে খাওয়া সওয়াবের কাজ। আর সুবহে সাদেক তথা ভোর রাতের শেষ সময়ে সেহরি খাওয়া মোস্তাহাব বা উত্তম। এর মানে এই নয় যে, ফজরের সময় হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ সকল আম্বিয়ায়ে কেরামকে তাড়াতাড়ি ইফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন আর সেহরি দেরি করে খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাইতো ‘সাহাবায়ে কেরাম আজমাঈন ‘সময় হওয়ার সাথে সাথে (দেরি না করে) ইফতার করতেন এবং সেহরির শেষ সময়ে খাবার খেতেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)

৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাদের রোজা এবং আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া। (অর্থাৎ মুসলিমরা সেহরি খায় আর ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সেহরি খায় না)।’ (মুসলিম, নাসাঈ)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেহরি খাওয়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত, বরকত ও কল্যাণ পেতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে সেহরি খাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।

 




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!